শীতকালীন বাজারে এখনো গরম কমেনি
একতা প্রতিবেদক :
নভেম্বর মাসের শুরু থেকেই বাজারে সীমিতভাবে আসতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে। তবে বাজারে শীতকালীন সবজির আমদানি বাড়তে থাকলেও দামের গরম কমেনি। দাম এখনও কিছুটা বেশি। অনেক নিত্যপণ্যই উচ্চমূল্যেই বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, শীতকালীন সবজি বাজারে নতুন হওয়ায় দাম বাড়তি। আর যেসব সবজি শীতের না সেগুলোর সিজন শেষ, তাই সেগুলোরও দাম বেশি।
তবে দুই মাস ধরেই বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। ফলে স্বস্তি মিলছে না সাধারণ মানুষের। ১৪ নভেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
শীতকালীন সবজি নতুন এসেছে বলে এসবের দাম বেশি, আবার যেসব সবজি শীতের না সেগুলোর সিজন শেষ বলে দাম বেশি। এমনই এক পরিস্থিতি চলছে বাজারে। যেখানে সাধারণ মানুষের স্বস্তির জায়গাটা দিন দিন সীমিত হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা উচ্চমূল্যের বাজারে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। তবে যেন এদিকে নজর নেই সরকার বা সংশ্লিষ্ট কারোরই।
নভেম্বরের মধ্য সপ্তাহে বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় টমেটো ১৪০ টাকা, দেশি টমেটো ১৪০-১৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৮০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চায়না গাজর ১৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ১০০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১২০ টাকা, শিম ১২০-১৪০ টাকা, শালগম ১০০ টাকা, নতুন আলু ১৬০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ১২০ টাকা, দেশি শসা ১০০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১২০ টাকা, পটোল (হাইব্রিড) ৬০ টাকা, দেশি পটোল ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ১০০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০-১২০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকা, কচুরমুখী ৭০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা, ধনেপাতা (মানভেদে) ২০০-৩৬০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৬০-৮০ টাকা, পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে (বাজার ও দোকানভেদে দামের ভিন্নতা রয়েছে)।
আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০-১২০ টাকা, চাল কুমড়া ৭০-৮০ টাকা, ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা। এছাড়া, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা করে।
কাঁচামরিচ, ধনেপাতা ও লেবু বাদ দিলে মূল সবজির মধ্যে ২০টির দাম ১০০ টাকা বা তারও ওপরে। ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে রয়েছে ১১ ধরনের সবজির দাম। আর ৫০ টাকা বা তার নিচে রয়েছে ৩টি সবজির দাম।
ক্রেতারা বলছেন, মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও সব ধরনের সবজির দাম বেশি, কয়েক দিনের ব্যবধানে তা আরও বেড়েছে। বিক্রেতাদের দাবি, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সবজির সরবরাহ কমেছে, ফলে দামও বেড়েছে।
সবজি ক্রেতা মো. নাজির হোসেন বলেন, বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ তুলনামূলকভাবে অনেক বৃদ্ধি পেলেও দাম রয়েছে সেই অনুযায়ী কিছুটা বেশী। কয়েক দিন সবজির সরবরাহ বেড়ে দাম কমায় অনেকটাই খুশি হয়ে ছিলাম। তবে গত তিন দিন ধরে সরবরাহের পাশাপাশি দামও বাড়ছে। এ অবস্থার ফলে আমাদের মতো নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজনদের অনেকটাই বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১১০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা করে। দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকা, সাদা আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৩০-৩৫ টাকা, দেশি রসুন ৮০-১১০ টাকা, চায়না রসুন ১৬০-১৮০ টাকা, চায়না আদা ১৮০-২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৬০-১৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক পেঁয়াজের বিক্রেতা বলেন, বেশি দামের আশায় অনেকে পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছে। তাই বাজারে ঘাটতি আছে। আর এই ঘাটতি থাকার কারণেই দাম হুট করে বেড়ে গিয়েছে। না হলে এভাবে হুট করে বেড়ে যেতো না। সিজন শেষের দিকে একটু দাম বাড়ে তা ঠিক আছে। কিন্তু এভাবে বাড়ে না।
পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের মজুত শেষের দিকে, ফলে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। ডিসেম্বরে হয়তো সংকট কাটকে। অন্যদিকে আলুর মজুদ আছে পর্যাপ্ত। তবে সরবরাহ কমতির কারণে সবজির দাম বাড়তির দিকে বলে জানান ব্যাবসায়ীরা।
গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগি ১৬২-১৮০ টাকা, কক মুরগি ২৫০-২৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০-৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি ডজন মুরগির লাল ডিম ১১৫-১২০ টাকা এবং সাদা ডিম ১১০-১১৫ টাকা, হাঁসের ডিম ২০০-২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রতিকেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ৮ টাকা, কক মুরগির দাম কমেছে ১০-১৩ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম কমেছে ৩ টাকা। এছাড়া সব ধরনের মুরগির ডিমের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে হাঁসের ডিমের দাম বেড়েছে ডজনপ্রতি ২০ টাকা করে।
অন্য সময়ের মতো আজও কোনও পরিবর্তন আসেনি মুদি দোকানের পণ্যের দামে। সব পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। প্রতিকেজি প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ৯০-১৩০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৫৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০-১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা, খোলা চিনি ৯৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৩০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাচ ৪৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আলেয়া বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে নানা পণ্যের নানা দাম। তবে কোনো পণ্যের দাম যেন কমছে না। দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের মতো সাধারণ লোকদের চলা খুবই কষ্টকর হয়ে যায়।
পল্টন এলাকার এক ব্যবসায়ী সাপ্তাহিক একতাতে বলেন, ‘বাজারের ছোট দোকানি আমরা। আমরা পণ্য কিনে পণ্য বেচি। আমাদের কাছে দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে লাভ আছে। যারা বড় বড় ব্যবসায়ী তাদের ধরেন। তারাই দাম বাড়ায়।’
শেষের পাতা
‘কমরেড শ্রীকান্ত দাশ আজীবন জনগণের জন্য কাজ করেছেন’
সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক
হাট-বাজার-ঘাট-হাওড়-বাঁওড়-বিল জলমহাল-বালুমহালে ইজারা বাতিল কর
কমরেড আবুল কালাম আকালের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ডেঙ্গু: সাড়ে তিনশ ছাড়াল মৃত্যু ৯২ শতাংশই ৬ শহরে
৭ দিনের সংবাদ...
কমরেড দাউদ হোসেনের প্রয়াণে সিপিবির শোক
বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি উদীচীর
‘শহীদ লখাই হাওলাদার লড়াই সংগ্রামের প্রতীক’
লেখা আহ্বান
মহিলা পরিষদের উদ্যোগে কবি সুফিয়া কামালের প্রয়াণ দিবস পালন
Login to comment..








প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন