ডাবের পানিতে আগুন
একতা প্রতিবেদক :
দেশব্যাপী চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ; গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ সারা দেশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। গ্রীষ্মের এই কাঠফাটা রোদ আর গরমে সাধারণ মানুষের হাঁসফাঁস দশা। বেড়েছে পানি ও পানীয়ের চাহিদা। কোমলপানীয় হিসাবে কোল্ডড্রিংসের চাহিদা না থাকলেও ডাবের পানি খাচ্ছে মানুষ। এই পরিস্থিতিতে বেড়েছে ডাবের দাম। রাজধানীতে বড় আকারের ডাবের দাম উঠেছে ১৪০-১৫০ টাকায়। ছোট আকারের কচি ডাব কিনতে গেলেও গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা বা তার ওপরে।
গত ২৩ এপ্রিল রাজধানীর গুলিস্তান, পুরানা পল্টন, মতিঝিল ও কমলাপুর ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
পুরানা পল্টন মোড়ে ভ্যানে করে ডাব বিক্রি করেন সিরাজুল আকবর। সাপ্তাহিক একতাকে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটির পর পাইকাররা ডাবের দাম ৩০ থেকে ৬০ টাকা বাড়িয়েছে। এতে আমাদেরও দাম বাড়াতে হচ্ছে’।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শাহবাগ ও টিএসসি এলাকায় ডাবের দাম বেশ বাড়তি দেখা গেছে। ঢাকার অন্যতম পাইকারি বাজার কাওরান বাজারেও দেখা গেছে সচরাচর দামে থেকে বেশি।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বরিশাল, ভোলা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, ফরিদপুর, যশোর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের সরবরাহ পয়েন্টেও বেড়েছে ডাবের দাম। ফলে বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ডাব।
সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার ও রাস্তার পাশে ফুটপাতে ভ্যানে করে বিক্রি করা ডাবের দোকান ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বড় আকারের প্রতি পিস ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা গরমের এই হাসফাঁস অবস্থার আগেও ৯০ থেকে ১২০ টাকা ছিল। মাঝারি আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা। আর ছোট আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। তবে একেবারেই ছোট আকারের ডাব ৭০ থেকে ৯০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ গত মাসেও এসব ডাবের দাম ২০-৪০ টাকা করে কম ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা সাপ্তাহিক একতাকে জানান, গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে রাজধানীতে ডাবের চাহিদা বেড়েছে। তবে সেই তুলনায় চালান নেই। যার কারণে পাইকারি বাজারেই বেড়েছে ডাবের দাম। আর এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। সামনের দিনে এভাবে গরম থাকলে ডাবের চালান না বাড়লে ডাব সংকটেও পড়তে হবে বলে জানান তিনি।
শাহবাগে ডাব বিক্রি করেন আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, ডাবের চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ বাড়েনি। যার কারণে বাজারে ডাবের যোগান কম। তাই দাম বেশি। গরম কমার আগে ডাবের দাম আর কমার সুযোগ নেই। বরং আরও বাড়তে পারে।
ডাবের দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। সুযোগ পেলেই তারা দাম বাড়িয়ে দেন।
পল্টন মোড়ে ডাব খেতে আসা আরমান নামের এক শিক্ষার্থী সাপ্তাহিক একতাকে বলেন, ১২০ টাকা দিয়ে মাঝারি আকারের একটি ডাব কিনেছি। এই সাইজের ডাব গত সপ্তাহে ৮০ টাকা ছিল। হুট করে তো আর ডাব হয় না যে হুট করে দাম বেড়ে যাবে। ডাবের সংকট হয়নি, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন বছরব্যাপী ফল উৎপাদন ও পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ সংবাদপত্রে দেওয়া এক সাক্ষাতে বলেন, দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারিকেলের চাষ বাড়ছে না। চাহিদা বাড়ায় ডাব ও নারকেল উভয়ের দামই বেড়েছে।
Login to comment..