‘সেলিব্রেটি উপাচার্য’

Posted: 21 এপ্রিল, 2024

একতা প্রতিবেদক: এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আনুষ্ঠানিক প্রধান রাষ্ট্রপতি বা আচার্য। কিন্তু এটা কাগজে-কলমে। বাস্তবে বিশ্ববিদ্যালয় চালান উপাচার্য। তিনিই, প্রধান ব্যক্তি। তবে তিনি সঙ্গে ছাত্রলীগকে রাখেন। তার মানে কিন্তু এই না যে, ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় চালায়! যদিও এক সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উপাচার্য লীগ’ নামেও নাকি একটা ছাত্র সংগঠন ছিল। উপাচার্য যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ব্যক্তি ফলে উনার কর্মকাণ্ডের ধরণও হবে ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ সেটাই তো স্বাভাবিক। দুর্নীতিতেও তারা সর্বোচ্চ! এই যেমন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে বিভিন্ন পদে ১৩৮ জনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো ব্যক্তির পক্ষে এককভাবে একদিনে এতজনকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব কিনা সেটা গবেষণার বিষয়। কিন্তু তিনি যেহেতু একাধারে সন্মানিত শিক্ষক এবং উপাচার্য ফলে তিনি এটা করতেই পারেন। উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার আগে খুব কম মানুষই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডা. শারফুদ্দিন আহমদকে চিনতেন। কিন্তু দুর্নীতির কারণে পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন হয়েছে। এখন তিনি রীতিমত ‘সেলিব্রেটি’। আমাদের দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাই দুর্নীতি করে সেলিব্রেটিতে পরিণত হয়েছেন। টিভিতে, ফেইসবুকে, পত্র-পত্রিকায় এখন তাদের বড় বড় ছবি ছাপা হয়। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শারফুদ্দিন আহমদ নাকি তার তিন বছরের মেয়াদে স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিকসহ বিভিন্ন উপায়ে ২ হাজারের বেশি অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, মেডিকেল অফিসার, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নার্স, ওয়ার্ড বয়, আয়া, গাড়িচালক, সুইপার ও এমএলএসএস নিয়োগ দিয়েছেন। তার মধ্যে তার ছেলে তানভীর আহমেদ ও ছেলের স্ত্রী ফারহানা খানম চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। উপাচার্য শারফুদ্দিনের স্ত্রী নাফিজা আহমেদের ভাইয়ের ছেলে সাব্বির হোসেনকেও কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তার বিদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে নাচ-গান করেছেন। ‘সেলিব্রেটির’ বিদায় বলে কথা!!